নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: ছাত্র-জনতার দুনিয়া কাঁপানো রক্তাক্ত অভ্যুত্থানের মুখে শিশুঘাতী, কিশোরঘাতী, নারীঘাতী, শ্রমিকঘাতী গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশের স্বস্তি-শান্তির অভাবনীয় স্বর্ণদ্বার উন্মোচিত হলেও রাষ্ট্র ও সরকারের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঘাপটি মেরে বসে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসররা সবকিছু লন্ডভন্ড করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

তারই ধারাবাহিকতায় স্বাভাবিক পাথরঘাটাকে অস্বাভাবিক করার জন্য বসে আছে আ’লীগ নেতা, সাবেক ইউপি সদস্য ও ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচনে অংশ নেওয়া রেজাউল করিম রাজা ও তারই স্ত্রী পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র ফরিদা ইয়াসমিন।

তাদের নেতৃত্বে পাথরঘাটায় চালাচ্ছে আওয়ামী লীগের ত্রাসের রাজত্ব। আ’লীগ সরকারের সময়ে রাজার নেতৃত্বে চালানো হয়েছিল বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা।

এছাড়াও রাজা মেম্বার উপজেলা আনসার-ভিডিপির প্লাটুন কমান্ডার, ফ্যাসিস্ট সরকারের ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের স্ত্রীকে দুইবার কাউন্সিলার ও প্যানেল মেয়র নির্বাচিত করেন এবং তিনি নিজেও দুইবার ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয় অবৈধ কারচুপি ডামি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে।

ফ্যাসিস্ট সরকার হাসিনার হয়ে প্রতিটা ডামি নির্বাচন সফল করতে আনসার-ভিডিপি সদস্যদের দিয়ে দিনের ভোট রাতে করিয়েছেন এই আ’লীগ নেতা রাজা।

বরগুনা-২ আসনের সাবেক সাংসদ সদস্য নাদিরা সুলতানা ও শওকত হাসানুর রহমান রিমনের আস্থাভাজন কর্মী ছিলেন তিনি, রেজাউল করিম রাজা ও তার স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক অভিযোগ।

তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির প্রলবণ দেখিয়ে হাতিয়ে নেয় লক্ষ লক্ষ টাকা, নামে বেনামে গড়েছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়।

উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল বলেন, যে দলের প্রধান নেতা (শেখ হাসিনা) তার কর্মী-নেতাদের রেখে পালিয়ে যান সেই দলকে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নিজেরাই ভীত।

কারণ ওরা অন্যায়কারী, অত্যাচারী, স্বৈরাচার। তবে তারা পালিয়ে গেলেও দেশের ভেতরে বাইরে আবারও ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগের কোনো ষড়যন্ত্র পাথরঘাটায় সফল হতে দেওয়া যাবে না। দৃঢ় হাতে তাদেরকে দমন করতে হবে।

পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বলেন, আওয়ামী স্বৈরাচারের দোসর সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল করিম রাজা ও তাদের প্রেতাত্মারা এখনো দেশের পাড়া মহল্লার আনাচে কানাচে রয়ে গেছে।

তারা সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করার চক্রান্ত করছে। বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বানও জানান তিনি।

জিসাস নেতা বলেন, গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগ যা করেছে, বিএনপি ঠিক তার বিপরীত কাজ করবে; আওয়ামী লীগ এদেশের জনগণের ওপরে যেভাবে জুলুম অত্যাচার নির্যাতন ও নিপীড়ন চালিয়েছে; কিন্তু বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা এদেশের জনগণের পাশে থেকে জনগণের জন্য শতভাগ কাজ করে একটা সুন্দর সমাজ গড়তে চাই।

বিএনপির আহ্বায়ক বলেন, ১/১১-এর পরে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে, তখন তারা নিজেদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে ধরে রাখার জন্য সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিলটি বাতিল করে দিয়েছে।

কারণ, জনগণের ভোট পাবে না বলেই তারা (আওয়ামী লীগ) তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে। যার ফলশ্রুতিতেই গত ১৫ বছরে কেউ ভোট দিতে পারেনি।

‘পতিত স্বৈরশাসকের অনুচর’রা হাসিনা পালানোর পর ভীষণ মনোকষ্ট নিয়ে দিনরাত্রি স্বাভাবিক পাথরঘাটাকে অস্বাভাবিক করার চক্রান্তে মেতে থাকছে রাজা মেম্বারসহ আ’লীগের দোসররা।

‘৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট মাফিয়া প্রধানের পলায়নের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক মানবিক বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার এক অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে’।

বর্তমানে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, মাফিয়াপ্রধান পালালেও মাফিয়া চক্রের অনেকেই এখনো রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বহাল তবিয়তে ঘাপটি মেরে রয়েছে। সুযোগ পেলেই তারা স্বরূপে আভির্ভূত হচ্ছে।

আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, দেশের জনগণের ভালোবাসায় ধন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির বিরুদ্ধে একটি গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।