নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: বরগুনায় ভেঙে ফেলা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর’। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে জনরোষের মুখে এটি ভেঙে ফেলা হয়। দীর্ঘ ১৬ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের অবসানের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এ জাদুঘর ভাঙার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর বরগুনা পৌর পুরাতন গ্রন্থাগার ভেঙে ১৬৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থের নৌকা আকৃতির জাদুঘরটি নির্মাণ করা হয়। তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহর পরিকল্পনায় এটি নির্মিত হয়।
প্রাথমিকভাবে এটি নৌকা গবেষণাকেন্দ্র, আধুনিক লাইব্রেরি, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নারসহ নানা সুবিধাসম্পন্ন একটি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার আশ্বাস দেওয়া হলেও বাস্তবে তা হয়নি।
স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা দাবি করেন, এটি শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর নামে হওয়ায় জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুরাদ খান বলেন, “নৌকা জাদুঘরকে বঙ্গবন্ধুর নামে উৎসর্গ করায় জনরোষ সৃষ্টি হয়।
জনগণ আগুন ধরিয়ে ধ্বংসের চেষ্টা করলেও খালি হাতে ভাঙতে না পেরে পরে সরঞ্জাম নিয়ে পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। আমরা এখানে শহীদ জিয়া স্মৃতি পাঠাগার তৈরির দাবি জানাই।”
বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রেজবিউল কবির অভিযোগ করেন, “এটি তৈরির আড়ালে কোটি কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। পুরনো গণ পাঠাগার ভেঙে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল, যা জনগণ মেনে নেয়নি।
যারা এটি ভেঙেছে, তারা প্রকৃত দেশপ্রেমিক। আমরা জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করবো এবং এখানে শহীদ জিয়া পাঠাগার নির্মাণ চাই।”
পর্যটন উদ্যোক্তা আরিফুর রহমান বলেন , “নৌকাকে দলীয় প্রতীকের পরিবর্তে ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করলে এটি হয়তো রাখা যেত। নাম পরিবর্তন করে হলেও এটি সংরক্ষণ করা উচিত ছিল।”
নৌকা জাদুঘর ভাঙার ঘটনায় বরগুনার রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি নেতারা এটি ভাঙাকে জনতার ন্যায়সঙ্গত প্রতিবাদ হিসেবে দেখছেন এবং সেখানে শহীদ জিয়ার নামে পাঠাগার তৈরির দাবি তুলেছেন।
অন্যদিকে, পর্যটন খাতের উদ্যোক্তারা মনে করছেন, ঐতিহ্যের স্বার্থে জাদুঘরটি সংরক্ষণ করা উচিত ছিল। তবে প্রশাসনের নীরবতা এবং জেলা প্রশাসকের বক্তব্য না পাওয়ায় এ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
https://slotbet.online/