• রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:২৬ অপরাহ্ন

সাবরেজিস্ট্রি অফিসের জমিতে বানানো আ. লীগের অফিস এখন মাদকের আখড়া

প্রতিনিধি / ৫৭ পড়া হয়েছে
প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: ঝিনাইদহ শহরের শিল্পকলা একাডেমির পেছনে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের জায়গা দখল করে নির্মাণ করা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় এখন মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জনরোষে ধ্বংস হয়ে গেছে এ কার্যালয়টি।

জানা গেছে, ২০২২ সালে তৎকালীন জেলা অওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঝিনাইদহ-১ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য আব্দুল হাই ও তার অনুসারীরা মিলে সাবরেজিস্ট্র অফিসের জায়গায় একটি ভবন নির্মাণ করে। তখন ওই ভবনটি জেলা অওয়ামী লীগের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার শুরু করা হয়।

সেখানে দলীয় কর্মসূচিসহ নানা ধরণের আয়োজন করা হতো। কার্যালয়টিতে গোপন বৈঠক, সালিশি বাণিজ্যসহ নানা অপকর্ম করা হতো। অনেক সময় প্রশাসনে কর্মরত গুরুত্বপূর্ণ কর্তাব্যক্তিরাও আসতেন সেখানে। তাদের নিরাপত্তা ও স্থাপনা দেখভাল করার জন্য এই কার্যালয়ের আশপাশে সারাক্ষণ কড়া পাহারায় থাকতেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এখান থেকেই জেলার অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণ করতেন জেলা আওয়ামী প্রভাবশালী কয়েকজন নেতা। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জনরোষের শিকার হয় কার্যালয়টি। সেখানে হামলা চালিয়ে ভবনটি ভেঙে ফেলে বিক্ষুব্ধরা। সুযোগ সন্ধানী কিছু মানুষ লুট করেছেন ওই ভবনে থাকা মূল্যবান সম্পদ।

পুরো এলাকাটি পড়ে আছে বিরান। সেই থেকে সেখানে আস্তানা গেড়েছে মাদক কারবারিরা। বিকেলের পর নিয়মিত আড্ডা বসে নেশাখোরদের।
স্থানীয়রা জানান, ৫ তারিখের আগ পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগের এই কার্যালয়টি নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকলেও সরকার পতনের পর এটি জংলায় পরিণত হয়েছে। বিকেল হলেই সেখানে বসে মাদকসেবীদের আড্ডা, অবাধে চলে পতিতাবৃত্তিসহ নানা অসামাজিক কর্মকাণ্ড।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি না থাকায় এটি অপরাধীদের জন্য রীতিমতো অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়াও জেলার মহেশপুর, কোটচাঁদপুর, কালীগঞ্জ, হরিণাকুণ্ডু উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় গণবিক্ষোভে ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানেও জেলা কার্যালয়ের মতো একই ধরনের কর্মকাণ্ড চলছে। শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের ফটকও বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয়রা।

জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ বলেন,‘আওয়ামী লীগ তাদের শাসনামলে শুধু সরকারি জমি দখলই নয়, অনেক মানুষের জমি দখল করেও কার্যালয় বানিয়েছিল। বর্তমান সরকারের দায়িত্বরতদের উচিত হবে দ্রুত এসব জমিগুলো উদ্ধার করা।’

জেলা সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত হোসেন বলেন,‘যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে তখন তারা দখলে মরিয়া হয়ে ওঠে। শুধু সরকারি জমিই নয়, অনেক রাজনৈতিক দলের নেতারা সড়কের জমি দখল করেও স্থাপনা নির্মাণ করছে। এদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ না আগামীতেও অন্যান্য রাজনৈতিক দল এ কর্মকা- অব্যাহত রাখবে।’

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘মাসিক সমন্বয় সভায় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে খুব দ্রুত ওই জমিগুলো মেপে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করতে’।

তিনি আরো বলেন,‘জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। সেখানে যদি মাদকসেবীরা আস্তানা গড়ে তোলে, তবে সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান পরিচালনা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।’

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ রকম আরো সংবাদ...
https://slotbet.online/