নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের রামদেব দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে ধান চাষ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রধান শিক্ষক ব্যক্তিগত স্বার্থে মাঠটি স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছে দিয়েছেন। ইতোমধ্যেই উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
জানা গেছে, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের রামদেব গ্রামে ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়টি ১৫০ শতক জমির ওপর গড়ে উঠেছে। বর্তমানে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় চারশ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের নতুন একতলা ভবনের সামনে সাড়ে তিন বিঘার মাঠজুড়ে ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। আগে এই মাঠেই শিক্ষার্থীরা ফুটবলসহ বিভিন্ন খেলা খেলত। অভিযোগ রয়েছে, প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বসুনিয়া মাঠটি স্থানীয় প্রভাবশালী শাহীন মিয়ার কাছে বন্ধক বা বর্গা দিয়েছেন। এর ফলে কয়েক বছর ধরে মাঠে আর খেলাধুলা হয় না। শিক্ষার্থীরা এখন বিরতির সময় শ্রেণিকক্ষ কিংবা বারান্দাতেই সময় কাটায়।
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শুধু মাঠ দখল নয়, আরও নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০০৯ সালে যোগদানের পর থেকেই নিয়মিত স্কুল ফাঁকি, আত্মীয়কে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বানিয়ে মনগড়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ, শতবর্ষী গাছ বিক্রি, মাঠে থাকা পোস্ট অফিস উচ্ছেদ এবং শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করলেও এতদিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, যা এলাকাজুড়ে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। সাবেক শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অর্থও হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক বদিয়ার রহমান শিক্ষার্থীদের মাঠ সংকটের কথা স্বীকার করেছেন। তবে প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না, ফোনেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। প্রভাবশালী শাহীন মিয়ার মন্তব্যও পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এইচ. এম মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে মাঠ ও বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছে। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, “তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এর আগে মাঠ উন্মুক্তকরণ ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবিতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন। তাদের একটাই দাবি—শিশুদের মাঠ অবিলম্বে ফিরিয়ে দিতে হবে।
https://slotbet.online/