নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: গাজা উপত্যকায় হামাসের সঙ্গে ইসরাইলের যুদ্ধবিরতির চুক্তি চূড়ান্তভাবে ধ্বংস হয়েছে। এরমধ্য দিয়ে আবারও পূর্ণমাত্রার গণহত্যায় জড়াল ইসরাইলি বাহিনী।
এক রাতের মধ্যে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর একের পর এক আক্রমণে প্রাণ গেছে হাজারের মতো ফিলিস্তিনির। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, এই সংখ্যা বাড়বে, কারণ ধ্বংসাবশেষের নিচ থেকে উদ্ধার করা হচ্ছে আরও মরদেহ।
বিমান হামলায় শত শত ফিলিস্তিনির প্রাণহানির রেশ না কাটতেই গাজা উপত্যকায় এবার ‘স্থল অভিযান’ শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ২০ মার্চ ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাদের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। বার্তা সংস্থাটি বলছে, বুধবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের বাহিনী মধ্য ও দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় স্থল অভিযান পুনরায় শুরু করেছে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে মারাত্মক পর্বগুলির মধ্যে একটিতে বিমান হামলায় ৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার একদিন পর নতুন করে স্থল অভিযান শুরু হয়েছে, যা জানুয়ারি থেকে চলমান যুদ্ধবিরতিকে ভেঙে দিয়েছে। নেতানিয়াহু বাহিনীর এই পদক্ষেপ গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনকে আরও বাড়িয়ে তুলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদন বলছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনীর আরবি ভাষার মুখপাত্র আভিচায় আদরাই পূর্ব গাজার বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দাদের জরুরি ভিত্তিতে ঘরবাড়ি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এলাকাগুলো হলো বেইত হানুন, খিরবেত খুজা’আ, আবাসান আল-কাবিরা ও আবাসান আল-জাদিদা। বুধবার টানা দ্বিতীয় দিনের জন্য সতর্কতা জারি করে আদরাই বলেন, এই এলাকাগুলোয় বসবাসকারী বেসামরিক নাগরিকরা তাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলছেন। তিনি তাদের পশ্চিম গাজা সিটি বা খান ইউনিসের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে অনেক ফিলিস্তিনি এবার তাদের এলাকা থেকে সরে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। কারণ তাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। তারা বলছেন, যা কিছুই ঘটুক কেন, তারা গাজা ছেড়ে যাবেন না। তাদের ‘হারানোর কিছুই অবশিষ্ট নেই’।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের সীমান্তবর্তী এলাকায় হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর জবাবে গাজায় সর্বাত্মক অভিযান শুরু করে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। এতে গাজা উপত্যকা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। হতাহত হয় লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি। ঘরবাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয় আরও ২০ লাখ।
প্রায় ১৫ মাস সংঘাতের পর গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। চুক্তির আওতায় হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে বন্দি বিনিময় শুরু হয়। যদিও যুদ্ধবিরতির মধ্যেও বিভিন্ন অভিযোগে ইসরাইলি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের মধ্যেই ঘরে ফিরতে শুরু করেন উদ্বাস্তু ফিলিস্তিনিরা।
গত ১ মার্চ যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করে দেয় ইসরাইল। এরপর উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেই গত মঙ্গলবার গাজার নিরীহ বাসিন্দাদের লক্ষ্য করে আবারও হামলা চালাতে শুরু করে ইসরাইল।
https://slotbet.online/