• মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১১:০৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
জামায়াত আমির-মাইলস্টোনে নিহতের সংখ্যা বিশ্বাস করি না, এরচেয়ে সংখ্যা বেশি হবে গুরুতর ৩০ জনের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক-বার্ন ইনস্টিটিউট হিজলায় ঠিকাদারি না পেয়ে ক্ষুব্ধ বিএনপি নেতা, বন্ধ করে দিলেন ড্রেন নির্মাণ কাজ বরিশালে জামিনে মুক্তি পেলেন বাস্তুহারা দল নেতা মনির চলাচলের রাস্তায় বাউন্ডারি দেয়াল, গুটিয়ে দিলো স্থানীরা বিমানবন্দরে বরিশালের আওয়ামী লীগ নেতা আটক বরিশালে বাস চাপায় শ্রমিক দলের কর্মী নিহত জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিন: রুহুল কবীর রিজভী বরিশাল বিএনপির মামলায় ছাত্রলীগ নেতা আটক বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে মৃত ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের কফিন মিছিল

বরিশালে স্পিডবোট চলাচলে বাধা, অবশেষে মামলা

প্রতিনিধি / ৫৬ পড়া হয়েছে
প্রকাশিত : সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: নদীতে স্পিডবোট চলাচলে জন্য সব ধরনের কাগজপত্র ও অনুমতি থাকার পরও নদী ভাঙ্গন দেখিয়ে চাঁদা দাবিতে স্পিডবোট চলাচলে বাধা প্রদানের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি মহলের বিরুদ্ধে। চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ উল্লেখ করে সঠিক বিচারের দাবি জানিয়ে ভুক্তভোগী স্পিডবোটের মালিক মজনু আকন চলতি বছরের গত ১৫ এপ্রিল আদালতে একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন।

পাশাপাশি বৈধ স্পিডবোট যেন চলাচল করতে পারে সেজন্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরেও স্মারকলিপি দিয়েছেন মজনু। মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১০ এপ্রিল বিকেলে বরিশাল সদর উপজেলার সায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মুন্সি বাড়ীর মসজিদ সংলগ্ন মধ্যচর আইচা নদীর পাড়ে সায়েস্তাবাদের ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃতঃ সেরাজ উদ্দিন মীরের ছেলে হাকিম আলী মীর, ২ নং ওয়ার্ডের আমির আলী মেম্বারের ছেলে আনিক সহ একই এলাকার বাসিন্দা সাকিল হাং, খোকন হাং, খালেক হাং, আল-আমিন মীর, শাহিন হাং, আবুল হাং, মুনসুর রাঢ়ী সহ আরো অজ্ঞাত ১০/১৫ জন ব্যাক্তি সদর উপজেলার কাউনিয়া থানাধীন উত্তর লামচরী গ্রামের মৃত: আবুল হাসেমের ছেলে মজনু আকন এর মালিকানাধীন স্পীড বোড নদীতে চলাচলে বাধা প্রদান করে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এতে মামলার বাদী মনজু তাদের দাবিকৃত চাঁদার টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর করেন। এবং তার সাথে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।

পরে এঘটনায় আমি আসামীদের নাম উল্লেখ করে বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৩৮৫/ ৩৮৭/ ৩৭৯/ ৩২৩/ ৫০৬ (২) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নং-সিআর-১১৩/২৫।

পরে আদালত উল্লেখিত অভিযোগের তদন্তের জন্য কাউনিয়া থানার ওসিকে নির্দেশ প্রদান করেন। মামলার বাদী মজনু আকন জানান, আমরা র্দীঘ ১০ বছর ধরে তালতলী টু পাতারহাট রুটে নিয়মিত ভাবে স্পীড বোড চালিয়ে আসছি। কিন্তু সরকার পতনের পর থেকে সায়েস্তাবাদ এলাকার একটি চক্র আমাদের কাছে প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করেন।

আমার তাদের দাবিকৃত চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় উক্ত আসামীরা আমাদের বৈধ স্পিডবোট চলাচলে বাধা দিয়ে আসছে। শুধু তাই নয় কিছু দিন পূর্বে সায়েস্তাবাদের স্থানীয় কিছু লোক সাথে নিয়ে নদী মাঝে রশি টানিয়ে স্পিডবোট চলাচলে বাধা প্রদান করেন মহলটি।

পরে বিষয়টি নিয়ে বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে বৈধ স্পিডবোটি চলাচলের জন্য লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। পরে ২৫ রামজান থেকে ঈদের পরবর্তী ৮ তারিখ পর্যন্ত স্পিডবোট চলাচলের অনুমতি দেওয়ায় হয়। কিন্তু ৮ তারিখের পর ফের স্পিডবোট চলাচল শুরু করলে তোদের কারনে নদী ভাঙ্গছে বলে শ্লোগান দিয়ে শুরু হয় স্পিডবোট র্টাগেট করে ইট নিক্ষেপ। তাই বাধ্য হয়ে আসামীদের হাতে হামলার হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য স্পিডবোট নদী দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি।

স্পিডবোটের মালিক মজনু আরো বলেন, নদীতে স্পিডবোট চলাচলে জন্য নৌ-মন্ত্রণালয় সহ বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন, সার্ভে সনদ, চালকের লাইন্সেন, তালতলী টু পাতারহাট রুটে চলাচলের জন্য রুট পারমিট সহ সকল কাগজপত্র রয়েছে। কিন্তু তার পরেও কিভাবে তারা স্পীডবোট চলাচলে বাধা প্রদান করে আসছে তা আমার জানা নেই।

তাই আমি তাদের হামলার শিকার , হয়রানী ও চাঁদাবাজির হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য স্পীডবোটের বৈধ সকল কাগজপত্র নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করি। তিনি আরো বলেন, সরকার পতনের পর থেকেই এই মহলটি বেপোয়ারা হওয়ার কারনে তাদের বিচারের দাবি জানিয়ে আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আর্কশন করছি।

উল্লেখিত বিষয় গুলো নিয়ে মামলার আসামী সাকিল হাওলাদারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এই অভিযোগটা হলো সম্পূন্য মিথ্যা। এক অভিযোগটা হলো মানুষকে ফাঁসানোর জন্য। আমি একজন আলেম মানুষ। আমার প্রথম পরিচয় হলো বাংলাদেশ ইসলামী যুব আন্দোলন বরিশাল জেলা শাখার সহ-সভাপতি।

আমি এমন একটা সংগঠন করি যে সংগঠনের কাউকে কেউ চাঁদাবাজির দোষী সাব্যস্ত বলার এরকমের ক্ষমতা কেউ রাখে না। আশাকরি কোন ব্যাক্তিও চাঁদাবাজির করেছে এর প্রমান এবং কথা বলা সাহস নেই। সেই সংগঠনের লোকের নামে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে ওরা ভুল করলো।

মূলত বিষয় হলো ২০১৭ সাল থেকে গ্রামবাসী নদী ভাঙ্গনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন, মিছিল ও সামাবেশ এবং বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে ম্মারকলিপি দিয়েছেন ভাঙ্গন থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য। তাই ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর আমিও নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে থেকে তাদের পক্ষে প্রতিবাদ করে যাচ্ছি।

তার কারনেই হয়তো আমরা বিরুদ্ধে মিথ্যা একটি চাঁদাবাজি মামলা দিয়েছে। এবং মামলায় চাঁদাবাজি সহ যে কথা গুলো উল্লেখ করা হয়েছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি প্রতিবাদ করার কারনেই তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা চেষ্টা করে যাচ্ছে। তবে মিথ্যার কথার কোন সময় জয় হয় না। হবেও না আশা করি।

তিনি আরো বলেন, ঘটনাস্থলে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও এসিল্যান্ড স্যার পরিদর্শন করে উভয় পক্ষকে নিয়ে বসেছে। এবং কি তিনি স্পীড বোর্ডের কাগজ পত্র দেখে সঠিক নেই বলে জানান। প্রতিবেদকের প্রশ্লের সাকিল হাওলাদার আরো বলেন, যারা মিথ্যার পক্ষে কিছু টাকার বিনিময় মিথ্যার পক্ষে থেকে কাজ করছে। তারা কখন ভালো থাকতে পারবে না। সাকিল বলেন, সকল প্রশাসন নদী ভাংঙ্গনের পক্ষে। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক স্যার তদন্ত করছে।

মামলার তদন্তর বিষয় নিয়ে কাউনিয়া থানার ওসি নাজমুল নিশাত এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আদালতে একটা কোর্ট পিটিশন মামলা হয়েছে। যা এসআই হাবিব তদন্ত করছে।তিনি আরো বলেন, মামলার বাদীর সাথে তদন্তকারী কর্মকতা কথা বলেছে। তদন্ত এখনও চলমান রয়েছে। তবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই তদন্তের রির্পোট আদালতে প্রেরন করা হবে।

এবিষয়টি নিয়ে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইকবাল হাসান এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সায়েস্তাবাদ এলাকার নদী ভাঙ্গনের ক্ষতিগ্রস্ত স্থান গুলো আমরা গত মাসে পরিদর্শন করেছি। এবং পরিদর্শন করে নদীর যে পাড় গুলো ভাঙ্গছে সে গুলো রক্ষা করার জন্য কি করনীয় আছে সে বিষয় গুলো জেলা প্রশাসক স্যারকে বলা হলে পরে জেলা প্রশাসক মহোদয় স্যার বিষয়টি দেখার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের ইঞ্জিনিয়াকে অব্যগত করেন। পাশাপাশি একটি ভাঙ্গন রোধের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটির রির্পোটের পর স্যার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান তিনি।

স্পিডবোট চলাচলে বাঁধা প্রদানের প্রতিকার এবং নিয়মিত চলাচলের অনুমতি পাইবার জন্য নৌ-মন্ত্রণালয় সহ বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন, সার্ভে সনদ, চালকের লাইন্সেন, তালতলী টু পাতারহাট রুটে চলাচলের জন্য রুট পারমিট সহ সকল কাগজপত্র সহকারে বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ এর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ক্যবস্থাপনার কার্যলয়, বরিশাল জেলা প্রশাসক, মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিনার কার্যলয়, বরিশাল সদর ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি দিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, বরিশাল সদর উপজেলার তালতলী স্পিডবোট ঘাট থেকে প্রতিদিন প্রায় দুই শতাধিকের মত মানুষ মেহেন্দিগঞ্জ ও পাতারহাট সহ বিভিন্ন স্থানে যেতে এই নৌ পথটি ব্যাবহার করে থাকেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ রকম আরো সংবাদ...
https://slotbet.online/