• রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:৪৩ অপরাহ্ন

তালাকের কথা শুনে স্বামীর বাড়িতে গৃহবধূর অনশন

প্রতিনিধি / ৫৭ পড়া হয়েছে
প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: তালাক দেওয়ায় কথা শুনে স্বামীর বাড়িতে ৬ দিন ধরে অনশনে মদিনা আক্তার (২৮) নামে এক গৃহবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের বড়কান্দা গ্রামে। তার স্বামী তামিম তাকে তালাক দিয়েছে শোনার পর থেকেই তিনি এই প্রতিবাদী অবস্থান নিয়েছেন।

জানা যায়, ৫ বছর আগে আদালতের মাধ্যমে বিয়ে হয় মদিনা আক্তারের সঙ্গে বড়কান্দা গ্রামের মোতালেব মিয়ার ছেলে তামিমের। বিয়ের পর থেকেই তামিম শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন এবং মদিনা তার স্বামীর ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন করতেন।

মদিনার পরিবারে আর কোনো ওয়ারিশ না থাকায় তিনি তামিমকে জীবনের সঙ্গী হিসেবে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে চলছিলেন। মদিনা তার নিজের উপার্জন ও সঞ্চিত অর্থ দিয়ে তামিমকে সহযোগিতা করতেন।

মদিনা আক্তার বলেন, গত ১৫ জানুয়ারি রাতে তামিম ২০ হাজার টাকা নিয়ে আমাকে রেখে বাড়িতে চলে যান। পরদিন সকালে আমি শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে স্বামীকে না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ি। এরপর এলাকাবাসীর মাধ্যমে জানতে পারি, তামিম আমাকে তালাক দিয়েছেন।

এরপর ২২ জানুয়ারি থেকে শ্বশুরবাড়িতে এসে অধিকার আদায়ের দাবিতে অনশন শুরু করি। ৬ দিন ধরে আমি শ্বশুরবাড়ির সামনে অবস্থান করছি। কিন্তু পরিবারের কেউ খোঁজ নেয়নি বা খেতে দেয়নি। আত্মীয়স্বজনের দেওয়া সামান্য খাবার খেয়েই দিন পার করছি।

তিনি আরও বলেন, আমি স্বামীর বাড়ি থেকে যাব না। আমার স্বামীকে আমি নিয়েই যাব। না হয় মরে যাব। গ্রামের মাতব্বর ইদ্রিছ মিয়া বলেন, এ ঘটনা খুবই দুঃখজনক। মদিনা দীর্ঘদিন ধরে অনশন করছে, যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

সাবেক মেম্বারও ঘটনাটিকে লজ্জাজনক বলে উল্লেখ করে বলেন, আমি প্রশাসনের কাছে দ্রুত এ ঘটনার সুরাহা চাই। এভাবে কাউকে কষ্টে রাখা মানা যায় না।

মদিনার শ্বশুর মোতালেব মিয়া বলেন, আমি এই বিয়ে মেনে নিতে পারছি না। তামিম মদিনাকে বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতে থাকত, কিন্তু এখন তারা যা করেছে তার জন্য আমার বাড়িতে জায়গা নেই। সে মরে গেলেও আমাদের কিছু আসে যায় না।

নওপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সারোয়ার জাহান কাওছার বলেন, আমি ঘটনাটি শুনে মদিনাকে একদিন গিয়ে দেখে এসেছি। গত দুদিন আগে তার বাবা এবং মা বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। পরিস্থিতির সমাধানের চেষ্টা করছি। কিন্তু এখনো কেউ এগিয়ে আসেনি। আমি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চাই।

তিনি আরও বলেন, মদিনার এই অনশন ও অধিকার আদায়ের লড়াই স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তবে এখনও এ সমস্যার কোনো কার্যকর সমাধান হয়নি। প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ এবং আইনানুগ পদক্ষেপ ছাড়া এই টানাপোড়েনের অবসান সম্ভব নয়। মদিনা আক্তারের জীবন এখন বিপন্ন। তার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সামাজিক ও প্রশাসনিক উদ্যোগ প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ রকম আরো সংবাদ...
https://slotbet.online/